জয়পুরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত | জয়পুরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় অনন্য বৈশিষ্ট্য এর জন্য বিখ্যাত।কোন জেলায় রয়েছে অনেক প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ।কোথাও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পসরা সাজানো।কোথাও বা লোকজ ঐতিহ্য এবং এবং শিল্প-সাহিত্যে সমৃদ্ধ।আবার কোন জেলা কৃষি পণ্যের জন্য বিখ্যাত।কোন কোন জেলা ঐতিহ্যবাহি খাবারের জন্য বিখ্যাত।দেশের প্রতিটি জেলা এসকল বৈশিষ্ট্যকে শুধু দেশের অভ্যন্তরীণ নয় বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে।আমরা জেনে আসছি কোন জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত এই সম্পর্কে।সেই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা জানব জয়পুরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত জয়পুরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি জয়পুরহাট জেলার থানা কয়টি জয়পুরহাটের বিখ্যাত খাবার জয়পুরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান জয়পুরহাট জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত এসব সম্পর্কে বিস্তারিত।
যে সকল বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনাজয়পুরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত
জয়পুরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
জয়পুরহাট জেলার থানা কয়টি
জয়পুরহাটের বিখ্যাত খাবার
জয়পুরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান
জয়পুরহাট জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
জয়পুরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত
জয়পুরহাট জেলা মূলত পোল্ট্রিশিল্প এর জন্য বিখ্যাত।এজন্য জয়পুরহাট জেলাকে সোনালী
রাজধানী বলা হয় কারণ দেশের সবচেয়ে বেশি সোনালী মুরগি এবং খামারি এই
জেলায়।জয়পুরহাট জেলায় তৈরি চটপটি এর জন্যও বিখ্যাত।এছাড়াও প্রধান অর্থকরি ফরসলের
মধ্যে লতিরাজ, কলা, ধান ইক্ষু অন্যতম।বাংলাদেশের পোলট্রি ভিলেজ খ্যাত জয়পুরহাট
জেলার জামালগঞ্জে ১৯৭৩ সালে প্রায় ১১ একর জমির উপর নির্মিত হয় জেলার সরকারি
হাঁস মুরগির খামার।সেই থেকে শুরু হয় পোল্ট্রি শিল্পের উৎপাদন আর এভাবেই জয়পুরহাট
জেলা বিখ্যাত হয়ে উঠে।
জয়পুরহাট জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
জয়পুরহাট জেলার বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক
অঞ্চল এ জেলার অন্তর্গত তিলকপুর বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের একটি প্রাচীন মফস্বল থেকে
সুতা ক্রয় বিক্রয়ের জন্য বিখ্যাত ছিল।জয়পুরহাট জেলার ইতিহাস সম্পর্কে কোন তথ্য
পাওয়া না গেলেও পাল ও সেন রাজবংশের অধীন ছিল বলে মনে করা হয়।বর্তমানে
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার গ্রাম সমূহ নিয়ে একসময়ের লালবাজার থানা গঠিত
হয়েছিল।
জয়পুরহাটের বিখ্যাত খাবার
আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি জয়পুরহাট জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত এই সম্পর্কে।চলুন জেনে
নিই জয়পুরহাটের বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে।জয়পুরহাট জেলা চটপটি(খাবার) এর জন্য
বিখ্যাত।যাই হোক জয়পুরহাট সদর থানা, পশ্চিম প্রান্তে যমুনা নদীর পূর্ব তীরে
পুরানাপইল এলাকায় এই থানা অবস্থিত ছিল। বর্তমানে স্থানটি করিমনগর বলে
পরিচিত.১৯৭১ সাল থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত জয়পুরহাট জেলা বগুড়া জেলার একমাত্র
মহকুমা ছিল। ১৯৮৪ সালে জয়পুরহাট জেলায় উন্নীত হয়।
জয়পুরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান
১।লকমা রাজবাড়ীঃজয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম করিয়া গ্রামের
ঐতিহাসিক লকমা রাজবাড়ি অবস্থিত।বাড়িটিতে বর্তমানে লকমা চৌধুরীঢ় নাতি সহ
উত্তরাধিকারী ও স্থায়ী বাসিন্দার সমন্বয়ে ৪২ জন সদস্য কমিটি করে দেখাশোনা করে
২০০ থেকে ৩০০ বছর পূর্বে বাড়ি নির্মাণ হয় এবং বর্তমানে এখানে প্রায় ১৫ বিঘা
জমি রয়েছে উক্ত জমিতে বিভিন্ন শস্য উৎপাদনের পাশাপাশি বিভিন্ন ফল ও ফুলের বাগান
দেখা যায়।দালান দুটির একটি ঘোড়াশাল এবং অপরটি হাতিশাল ছিল।তার একটু সামনেই মাটির
একটি ভিটি রয়েছে সেখানে বহুতল ভবনের অবস্থান।জনশ্রুতি আছে যে ভবনের কিছুটা অংশ
মাটির নিচে ডেবে গেছে।লকমা চৌধুরী বাড়ির পূর্ব পাশে কর্মচারীর ঘর ও কবরস্থান
রয়েছে।বর্তমানে রাজবাড়ীটি সংস্কারের অভাবে ধ্বংস হতে চলেছে এখনো প্রতিদিন অনেক
মানুষ স্বচক্ষে দেখার জন্য আসেন।
২।নান্দাইল দিঘিঃঐতিহাসিক নান্দাইল দীঘি জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলায়
অবস্থিত।দিঘিটি দীর্ঘে প্রায় এক কিলোমিটার।কথিত আছে রাজা নন্দলাল ১৬১০ সালে এই
ঐতিহাসিক দীঘিটি খনন করেন।এই দিঘিটির আয়তন ৫৯.৪০ একর।স্থানীয় জনগণের মতে দিঘিটি
এক রাতের মধ্যে খনন করা হয়েছিল।শিতকালে দিঘিটিতে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন
ঘটে।প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বর্তমানে এটি একটি পিকনিক স্পট হিসেবে পরিচিতি লাভ
করেছে।
৩।আছরাঙ্গা দীঘিঃজয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার ঐতিহাসিক নিদর্শন
আটরাঙ্গা দীঘি এর আয়তন 25.50 একর।ধারণা করা হয় প্রায় 400 বছর পূর্বের 11 ফুট
দৈর্ঘ্য এবং 1070 প্রস্থ বিশিষ্ট এই দীঘিটি খনন করা হয়।অনেকের মতে তাহিরপুর
রাজপরিবারের সদস্য এ দিঘি খনন করেছিলেন।১৯৯২ সালে এই দিঘিটি পুনরায় খনন করা হয়
যেখানে ১২ টি মূর্তি পাওয়া গেছে যা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত
আছে।দিঘির চারদিকে অসংখ্য গাছপালা এবং এর স্বচ্ছ পানি এক মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক
পরিবেশের সৃষ্টি করেছে যা সহজেই আকৃষ্ট করে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করে
এখানে আসা ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের।
৪।হিন্দা-কসবা শাহি জামে মসজিদঃহিন্দা-কসবা শাহি জামে মসজিদ বাংলাদেশের
জয়পুরহাট জেলায় অবস্থিত ইসলামিক স্থাপত্য শিল্পের ছোঁয়ায় নির্মিত অন্যতম মসজিদ।
জয়পুরহাট সদর থেকে 15 কিলোমিটার দূরে ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা গ্রামে এ মসজিদটি
অবস্থিত। বাংলা ১৩৬৫ সালে বাগমারি পির পরিচিত চিশতিয়া তরিকার অন্যতম পীর আব্দুল
গফুর চিশতী রাহমাতুল্লাহের নির্দেশে মাওলানা আব্দুল খালেক চিশতী আমলে তারই
তত্ত্বাবধানে মসজিদটি নির্মিত হয়।মসজিদটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর অবকাঠামো।
মোগল আমলের আকৃতিতে নির্মিত বেশিরভাগ মসজিদের বাইরের দেয়ালের পোড়ামাটির আস্তরণ
দেখা যায় কিন্তু এই মসজিদের বাইরে আস্তরণে পরিলক্ষিত হয় কাচ ও চিনামাটির
সমন্বয় বিভিন্ন নকশা। সূর্যের আলো পরতেই এই মসজিদটির ঝলমলে নজরকাড়া রুপ যে
কাউকেই মুগ্ধ করবে।ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের কথা চিন্তা করে এর 5 টি গম্বুজ তৈরি
করা হয়েছে। মাঝের বড় একটি ও চারপাশের চারটি ছোট গম্বুজ রড ছাড়াই তৈরি করা
হয়েছে। মসজিদের উত্তর পাশে 40 ফুট লম্বা মিনার রয়েছে।মিনারটির নিচে একটি ছোট
কক্ষ আছে যেখান থেকে আজানের ব্যবস্থা করা আছে।মিনারের উপরে মাইক স্থাপন করা আছে
যেখান থেকে আজানের ধ্বনি এলাকায় মুসল্লিদের নামাজে আহ্বান করা যায়।পূর্ব পাশে
রয়েছে হযরত শাহ সুলতান বখতির চারজন শীর্ষের মাজার।
এছাড়াও রয়েছেঃ
- জয়পুরহাট চিনিকল
- জামালগঞ্জ কয়লা খনি
- পাথরঘাটা
- ভীমের পান্টি
- দুয়ারী ঘাট
- বিলের ঘাট
- শিব মন্দির
- এবং পাগলা দেওয়ান বদ্দভুমি সহ অনেক কিছু।
জয়পুরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত | জয়পুরহাট কেন বিখ্যাত
আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি জয়পুরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত এবং জয়পুরহাট জেলার
দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে।বর্তমান সরকারের গ্রামীণ জনপদের উন্নয়ন বিস্তৃত করার
ঘোষণা অনুযায়ী জয়পুরহাট আক্কেলপুর বদল গাছি সড়কের সংযোগস্থল পর্যন্ত সড়ক
প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ কাজও প্রায় শেষের দিকে।জয়পুরহাট সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ
মাঠজুড়ে বয়ে চলা তুলশীগঙ্গা নদী ৪২ কিলোমিটার খনন থেকে ৩১ কিলোমিটার রাস্তা
নির্মাণের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে।যার ফলে এলাকার কৃষি ব্যবস্থার উন্নতি ও
জীবনযাত্রার মান বদলাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
জয়পুরহাট জেলার থানা কয়টি
জয়পুরহাট জেলা মোট ৫ টি উপজেলা ৫ টি পৌরসভা ও ৩২ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।এছাড়াও
এখানে ৯৮৮টি গ্রাম ও ৭৬৬ টি মৌজা রয়েছে।আমরা জয়পুরহাট জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত
আবং জয়পুরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানছি। আরও জেনেছি জয়পুরহাটের
বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে।এবার চলুন একনজরে জেনে নিই জয়পুরহাট জেলার থানা কয়টি এই
সম্পর্কে।
১।জয়পুরহাট সদর উপজেলা |
২।আক্কেলপুর |
৩।কালাই |
৪।ক্ষেতলাল |
৫।এবং পাঁচবিবি উপজেলা |
জয়পুরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি
আমরা জানলাম জয়পুরহাট জেলার থানা কয়টি এবং জয়পুরহাট জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত এই সম্পর্কে।নিচের টেবিল টি খেয়াল করলে আপনারা জেনে যাবেনজয়পুরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি সম্পর্কে।বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কৃতি সন্তানের জন্ম এই জয়পুরহাট জেলায়।তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন কণ্ঠশিল্পী দিলরুবা খানম,পাগলা পির দেওয়ান সমিরুদ্দিন,মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক খন্দকার অলিওজ্জামান আলম। এরারাওজয়পুরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি দের একটি তালিকা নিম্নে দেওয়া হলঃবিখ্যাত ব্যক্তি | পেশা |
---|---|
খুরশিদ আলম | একুশে পদক প্রাপ্ত কণ্ঠশিল্পী |
মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম | বিজিবি মহাপরিচালক |
আতাউর রহমান | কবি |
আলেমা ভাসানি | মাউলানা ভাসানির স্ত্রী |
ইয়াসিন আলি সরদার | সমাজ সেবক |
এছাড়াও রয়েছেনঃ
- মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ;বর্তমান বিজিবি মহাপরিচালক
- রামদেও বাজলা;শিক্ষানুরাগি
- অধ্যাপক মজিবুর রহমান দেবদাস;২০১৫ সালের একুশে পদক জয়ী
- শামসুদ্দিন হিরা;বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী
- আব্দুর রাজ্জাক চৌধুরি;সমাজসেবক
FAQ section:
১।প্রশ্নঃজয়পুরহাট কিসের জন্য বিখ্যাত ?
উত্তরঃজয়পুরহাট জেলা মূলত পোল্ট্রিশিল্প এর জন্য বিখ্যাত।এজন্য জয়পুরহাট জেলাকে
সোনালী রাজধানী বলা হয় কারণ দেশের সবচেয়ে বেশি সোনালী মুরগি এবং খামারি এই
জেলায়।জয়পুরহাট জেলায় তৈরি চটপটি এর জন্যও বিখ্যাত।
২।প্রশ্নঃজয়পুরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান কি কি ?
উত্তরঃজয়পুরহাট জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ সম্পর্কে আপনি জেনে গেছেন ইতিমধ্যে।
৩।প্রশ্নঃজয়পুরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি দের নাম কি ?
উত্তরঃজয়পুরহাট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি দের মধ্যে অন্যতম কণ্ঠশিল্পী খুরশিদ আলম
বিস্তারিত পোস্টে।
৪।প্রশ্নঃজয়পুরহাট জেলার থানা কয়টি ?
উত্তরঃজয়পুরহাট জেলার থানা ৫ টি।
৫।প্রশ্নঃজয়পুরহাটের বিখ্যাত খাবার কি ?
উত্তরঃজয়পুরহাটের বিখ্যাত খাবার চটপটি ও লতা।
৬।প্রশ্নঃজয়পুরহাট জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত ?
উত্তরঃবিস্তারিত পোস্টে।