তারাবির নামাজ নিয়ে সচারাচর যে প্রশ্নগুলো সকলের মনে জাগে, সেই সব বিষয়গুলো নিয়ে
জানবো ইনশাল্লাহ। মনোযোগ সহকারে সবগুলো বিষয় পড়তে থাকুন আর আপনার প্রস্নের উত্তর
পেয়ে জান।তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল , তারাবির নামাজ কত রাকাত,
তারাবি নামাজের নিয়ত, তারাবি নামাজের নিয়ম,তারাবি নামাজের মুনাজাত
,তারাবি নামাজের ফজিলত এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের জানার আগ্রহটা
আমাদের সবার মাঝেই কাজ করে। তাই আজকে আমরা পরিপূর্ণভাবে এই কতিপয় কিছু
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে জানবো।
তারাবি নামাজের নিয়ম
রমজান মাস হচ্ছে আমাদের সকল মুসলিমদের জন্য বরকতময় একটি মাস, গুনাহ
মাপের মাস। কোরআনে এ মাসকে আল্লাহতালা শ্রেষ্ঠ মাস হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
এই মাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত হল তারাবির নামাজ।আমরা অনেকেই জানি না
তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল। তারাবির নামাজ আসলে সুন্নতে মুয়াক্কাদা সকল
মুসলমান নর-নারির জন্য।তারাবির নামাজ পড়তে হয় এশা সালাতের পর
তারাবি নামাজের নিয়ত-নিয়ম। তারাবির নামাজ কতরাকাত
তারাবির নামাজ কত রাকাত
তারাবির নামাজ কতরাকাত এই বিষয়টিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ রমজান মাসে এশার
নামাজের পর যে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে তারাবির
নামাজ বলে। এটির নির্দিষ্ট কোনো রাকাতের কথা বলা হয়নি, দুই রাকাত করে ৮ রাকাত,
১০ রাকাত, ১২ রাকাত, ১৬ রাকাত, ২০ রাকাত পড়া যায়। তারাবির নামাজ কত রাকাত হবে,
রাসুলুল্লাহ (স.) তা নির্ধারণ করে যাননি।
তারাবির নামাজ পড়ার নিয়ম
তাছাড়া তারাবি নামাজ কতরাকাত নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। তবে হানাফি,
শাফিয়ি এবং হাম্বলী ফিকহ অনুসারে তারাবির নামাজ ২০ রাকাত। অন্যদিকে আহলে
হাদিসরা অনুযায়ী তারাবি নামাজ ৮ রাকাত।তবে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত তারাবি
নামাজের রাকাত হচ্ছে ২০ রাকাত। আমাদের মুসলিমদের উচিত তারাবির নামাজ কত রাকাত
এই বিষয়টি উপর নজর না দিয়ে স্বভাব এর উপর নজর দেয়া। যে এবাদাত করলে সওয়াব
বেশি হবে ঠিক এবাদাত করা।আমরা সকলেই জানি যে রমজান মাস হচ্ছে সিয়াম সাধনার
মাস। তাই এই মাসে তারাবি নামাজের কত রাকাত তা নিয়ে বিতর্কে না গিয়ে বেশি
বেশি ইবাদত বন্দেগী হওয়া।
হাদীসঃ-সায়ের ইবনে ইয়াজিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন সাহাবাগন উমর
(রাঃ) এর খেলাফতকালে রমজান মাসে বিশ রাকাত তারাবীহ পড়তেন। (বাইহাকী
শরীফ-খঃ ২/৪৯৬ হাঃ নং ৪৬১৭)
তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল তারাবির নামাজ কতরাকাত তারাবি নামাজের
নিয়ত
তারাবি নামাজের নিয়ম
-
নিশ্চিত করতে হবে যে আপনি এমন পোশাক পরছেন যা অন্ততপক্ষে আপনার সতর
ঢেকে রাখে। পুরুষদের জন্য সতর হল নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত সবকিছু ঢেকে
রাখা। মহিলাদের হাত, পা ও মুখ ব্যতীত সবকিছু ঢেকে রাখতে হবে।
-
একটি পরিষ্কার স্থান খুঁজুন (যেমন জায়নামাজ) এবং এমন কোথাও যা অন্যদের জন্য
অসুবিধার কারণ হবে না। দাঁড়ান এবং কিবলার দিকে মুখ করুন (মক্কার কাবার
দিকের দিক)। অসুস্থতা বা দুর্বলতার কারণে দাঁড়াতে না পারলে বসে
নামাজ পড়তে পারেন।
-
তারপর মনে মনে বাংলা বা আরবি নিয়ত করবেন।
-
তবে দুই রাকায়াত করে তারাবি নামাজের নিয়ত করবেন ।ইমামের সাথে ২০ রাকাত
তারাবির নামাজ সম্পন্ন করুন ।
- শেষে বেতের নামাজ পড়তে হবে।
-
তারাবি নামাজের নিয়ম ভালভাবে পালন করে সহিহ শুদ্ধভাবে নামাজ আদায় করতে
হবে।
তারাবি নামাজের নিয়ত-নিয়ম। তারাবির নামাজ কতরাকাত
তারাবি নামাজের নিয়ত
তারাবি নামাজের নিয়ত করা হচ্ছে সম্পূর্ণ মহান আল্লাহর নিকট নৈকট্য লাভ করা।
তারাবি নামাজের নিয়ত যে সুস্পষ্ট ভাবে উচ্চারণ করতে হবে এরকম কিছু নয়। আপনি
চাইলে বাংলা আরবি দুইভাবেই নিয়ত করতে পারেন ।তবে দুই রাকায়াত করে তারাবি
নামাজের নিয়ত করতে হয় ।
তারাবি নামাজের নিয়ত আরবি ( বাংলা উচ্চারন)
উচ্চারণ: নাওয়াইতুআন উসালিয়া লিল্লাহি তাআ’লা, রাকাআ’তাই সালাতিত তারাবিহ
সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তাআ’লা ( যদি জামাআ’তের সহিত নামাজ হয় তবে-
ইক্বতাদাইতু বি হাজাল ইমাম বলতে হবে। ) মুতাওয়াযজ্জিহান ইলা যিহাতিল কা’বাতিশ
শারিফাতি, আল্লাহু আকবার।
তারাবি নামাজের নিয়ত বাংলা
অর্থ:
আমি ক্বিবলামুখি হয়ে(এই ইমামের পিছনে) দু’রাকাআত তারাবিহ সুন্নতে
মুয়াক্কাদাহ নামাযের নিয়ত করছি, আল্লাহু আকবার
তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল তারাবির নামাজ কতরাকাত
তারাবি নামাজের নিয়ত
তারাবি নামআজের ফজিলত
-
তারাবি নামাজের ফজিলত সম্পরকে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বাণীতে
বলেছেন, “যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াব লাভ করার আশায় রোজা
রাখেন এবং তারাবি নামাজ পড়েন, সেইসাথে কদরের রাতে জাগ্রত থেকে
আল্লাহর এবাদত করেন তার জীবনে আগের সব গুনাহ মাফ করা হবে।” (বুখারী
এবং মুসলিম)।
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (স.)
রমজান মাসে রাতের বেলায় মসজিদে নববীতে তারাবির নামাজ আদায় করলেন।
সেখানে উপস্থিত লোকেরাও তার সঙ্গে তারাবির নামাজ আদায় করলেন।
একইভাবে উপস্থিত লোকেরা দ্বিতীয় দিনেও তারাবির নামাজ আদায়
করলেন এবং পরে আরো লোকসংখ্যা অনেক বেশি হলো। পরের তৃতীয় এবং চতুর্থ
দিনেও বহু মানুষ একত্রিত হলো। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুজরা থেকে বেরিয়ে উপস্থিত লোকদের সামনে এলেন না।
অতঃপর পরের সকালে তিনি তাদের কাছে এলেন এবং বললেন "তোমাদের অপেক্ষা
করার বিষয়টি আমি লক্ষ্য করেছি কিন্তু শুধু এ ভয়ে, আমি তোমাদের নিকট
আসা থেকে বিরত থেকেছি যে, আমার আশঙ্কা হচ্ছিল, না জানি- তোমাদের ওপর
তারাবির নামাজ ফরজ করে দেওয়া হয়।" (বুখারী)
FAQ SECTION
প্রশ্নঃ তারাবির নামাজ সুন্নত নাকি নফল ?
উত্তরঃ সুন্নত।
প্রশ্নঃ তারাবির নামাজ কত রাকাত ?
উত্তরঃ ২০ রাকাত পড়া উত্তম।
প্রশ্নঃ তারাবি নামাজের নিয়ত ?
আমি ক্বিবলামুখি হয়ে(এই ইমামের পিছনে) দু’রাকাআত তারাবিহ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নামাযের নিয়ত করছি, আল্লাহু আকবার